Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

পরিষদ আইন বিধি

 

 
 
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯
 
( ২০০৯ সনের ৬১ নং আইন )
 [অক্টোবর ১৫, ২০০৯]
   
     
ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
 
 
      যেহেতু, ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

      সেহেতু, এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
  
  প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
  
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ 
১। (১) এই আইন স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন নির্দিষ্ট এলাকাকে এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের সকল বা কোন বিধানের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) ইহা অবিলম্বে কাযর্কর হইবে।
  
 
  
   
  
সংজ্ঞা 
২। -বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) 'আইন প্রয়োগকারী সংস্থা' অর্থ পুলিশ বাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব), আনসার বাহিনী, ব্যাটালিয়ান আনসার, বাংলাদেশ রাইফেলস, কোস্ট গার্ড বাহিনী এবং প্রতিরৰা কর্মবিভাগসমূহ;

(২) 'আচরণ বিধিমালা' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত আচরণ বিধিমালা;

(৩) 'আর্থিক প্রতিষ্ঠান' অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) এর ধারা ২ এবং অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ৮ নং আইন) এর ধারা ২ এ সংজ্ঞায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান;

(৪) 'ইমারত' অর্থে কোন দোকান, বাড়িঘর, কুঁড়েঘর, বৈঠকঘর, চালা, আস্তাবল বা যে কোন প্রয়োজনে যে কোন দ্রব্যাদি সহযোগে নির্মিত কোন ঘেরা, দেয়াল, পানি-সংরক্ষণাগার, বারান্দা, প্ল্যাটফর্ম, মেঝে ও সিঁড়িও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৫) 'ইউনিয়ন' অর্থ এই আইনের ধারা ১১ এর অধীন ইউনিয়ন হিসাবে ঘোষিত পলস্নী এলাকা এবং বিদ্যমান ইউনিয়নসমূহ;

(৬) 'ইউনিয়ন পরিষদ' অর্থ এই আইনের ধারা ১০ এর অধীন গঠিত একটি ইউনিয়ন পরিষদ;

(৭) 'উপজেলা' অর্থ উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন) এর অধীনে উপজেলা হিসাবে ঘোষিত এলাকা এবং বিদ্যমান উপজেলাসমূহ;

(৮) 'উপজেলা পরিষদ' অর্থ উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন) এর অধীনে গঠিত উপজেলা পরিষদ;

(৯) 'উপজেলা নির্বাহী অফিসার' অর্থ একটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার;

(১০) 'ওয়ার্ড' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড;

(১১) 'কর' অর্থ কোন কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফি, শুল্ক অথবা এই আইনের অধীন আরোপযোগ্য কোন করও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১২) 'গ্রাম এলাকা' অর্থ শহর হিসাবে ঘোষিত নয় এইরূপ এলাকা;

(১৩) 'চেয়ারম্যান' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান;

(১৪) 'জনপথ' অর্থ সর্বসাধারনের ব্যবহার্য পথ, রাস্তা ও সড়ক;

(১৫) 'জনসংখ্যা' অর্থ সর্বশেষ আদমশুমারিতে উলিস্নখিত জনসংখ্যা;

(১৬) 'জমি' অর্থ নির্মাণাধীন বা নির্মিত অথবা জলমগ্ন যে কোন জমি;




১৭। 'জেলা' অর্থ District Act, 1836 (Act No. 1 of 1836) এর অধীন সৃষ্ট জেলা;

(১৮) 'ডেপুটি কমিশনার' অর্থে এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে নিয়োগকৃত কোন কর্মকর্তাকে বুঝাইবে যিনি ডেপুটি কমিশনারের সকল কিংবা যে কোন কার্য পালন করিবেন;

(১৯) 'তফসিল' অর্থ এই আইনের কোন তফসিল;

(২০) 'তহবিল' অর্থ ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল;

(২১) 'থানা' অর্থ ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ (১৮৯৮ সনের ৫নং আইন) এর বিধান অনুযায়ী গঠিত পুলিশ স্টেশন;

(২২) 'দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা' অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক নিযুক্ত কোন কর্মকর্তা;

(২৩) 'নগর এলাকা' অর্থ নগর হিসাবে ঘোষিত এলাকা;

(২৪) 'নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ' অর্থ সরকার বা এই আইনের কোন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত যে কোন সরকারি কর্মকর্তা;

(২৫) "নির্ধারিত পদ্ধতি' অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি।

(২৬) 'নির্বাচন কমিশন' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত নির্বাচন কমিশন;

(২৭) 'নির্বাচন পর্যবেক্ষক' অর্থ কোন ব্যক্তি বা সংস্থা, যাহাকে নির্বাচন কমিশন বা এতদুদ্দেশ্যে তদকর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যক্তি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য লিখিতভাবে অনুমতি দেওয়া হইয়াছে;

(২৮) 'নির্ভরশীল' অর্থ প্রার্থীর স্বামী বা স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, সৎ ছেলে-মেয়ে, পিতা, মাতা, ভাই বা বোন যিনি প্রার্থীর উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল;

(২৯) 'নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ' অর্থে দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) এ সংজ্ঞায়িত চাঁদাবাজি, চুরি, সম্পত্তি আত্নসাৎ, বিশ্বাস ভংগ, ধর্ষণ, হত্যা, খুন এবং Prevention of Corruption Act, 1947 (Act.II of 1947) এ সংজ্ঞায়িত Criminal Misconduct ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৩০) 'পথ' অর্থে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হোক বা না হোক পায়ে চলার এমন পথ, মাঠ, বহিরাঙ্গন বা চলাচলের রাস্তা বা সড়কও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৩১) 'পরিষদ' অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ;

(৩২) 'প্রবিধান' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(৩৩) 'বাজার' অর্থ এমন কোন স্থান যেখানে জনগণ মাছ, মাংস, ফল-মূল, শাক-সবব্জী বা অন্য যে কোন খাদ্য দ্রব্য বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য সমবেত হয় অথবা পশু বা গরু-ছাগল ও পশু-পক্ষী ক্রয়-বিক্রয় হয় এবং এমন কোন স্থান যাহা বিধি মোতাবেক বাজার হিসাবে ঘোষণা করা হইয়াছে;

(৩৪) 'বাজেট' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের একটি আর্থিক বৎসরের আয় ও ব্যয়ের নির্ধারিত আর্থিক বিবরণ;

(৩৫) 'বার্ষিক মূল্য' অর্থ কোন গৃহ বা জমি প্রতি বছর ভাড়া দিয়া প্রাপ্ত অথবা প্রাপ্য মোট টাকা;

(৩৬) 'বিধি' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(৩৭) 'ব্যাংক' অথ

(ক) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন) এর ধারা ৫(ণ) এ সংজ্ঞায়িত ব্যাংক কোম্পানী;


(খ) The Bangladesh Shilpa Rin Sangstha Order, 1972 (P.O.No. 128 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা;

(গ) The Bangladesh Shilpa Bank Order, (P.O. No. 129 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক;

(ঘ) The Bangladesh House Building Finance Corporation Order, 1973 (P.O. No.17 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন;

(ঙ) The Bangladesh Krishi Bank Order, 1973 (P.O. No. 27 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক;

(চ) The Investment Corporation of Bangladesh Ordinance, 1976 (Ordinance No. XL of 1976) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ;



(ছ) The Rajshahi Krishi Unnayan Bank Ordinance, 1986 (Ordinance No.LVIII of 1986) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক; বা

(জ) কোম্পানী আইন ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Basic Bank Limited (Bangladesh Small Industries and Commerce Bank Limited);

(৩৮) 'মৌজা' অর্থ কোন নির্দিষ্ট এলাকা যাহা ভূমি জরিপের মাধ্যমে কোন জেলার ভূমি সংক্রান্ত দলিলে মৌজা হিসাবে লিপিবদ্ধ ও সংজ্ঞায়িত;



(৩৯) 'রাস্তা' অর্থে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত নয় এমন রাস্তাও ইহার অনত্দর্ভুক্ত হইবে;

(৪০) 'লাভজনক পদ' (Office of profit) অর্থ প্রজাতন্ত্র কিংবা সরকারী সংবিধিবদ্ধ কতৃর্পক্ষ কিংবা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ও যে সকল কোম্পানীতে সরকারের ৫০% এর অধিক শেয়ারের মালিকানা আছে সে সকল কোম্পানীতে সাবর্ক্ষণিক বেতনভুক্ত অফিস, পদ বা অবস্থান;

(৪১) 'সংক্রামক ব্যাধি' অর্থে এমন ব্যাধি যাহা একজন ব্যক্তি হইতে অন্য ব্যক্তিকে সংক্রামিত করে এবং সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রকাশিত অন্য যে কোন ব্যাধিও ইহার অনত্দর্ভুক্ত হইবে;

(৪২) 'সংবিধান' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান;

(৪৩) 'সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ;

(৪৪) 'সদস্য' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য;

(৪৫) 'সরকার' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার;


(৪৬) 'সরকারি রাস্তা' অর্থ সরকার কিংবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অথবা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রক্ষণাবেৰণাধীন জনসাধারণের চলাচলের জন্য সকল রাস্তা;

(৪৭) 'স্থানীয় কর্তৃপক্ষ' অর্থ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোন আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন বিধিবদ্ধ সংস্থা;

(৪৮) 'স্থায়ী কমিটি' অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কমিটি;

(৪৯) 'হাট' অর্থ পণ্যসামগ্রী, খাদ্য, মালামাল, পশুসমপদ, ইত্যাদি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান।
  
 
  
  দ্বিতীয় অধ্যায়
ওয়ার্ড
  
ওয়ার্ড গঠন 
৩। (১) ইউনিয়ন পযার্য়ে সংরক্ষিত আসন ব্যতিরেকে সাধারণ সদস্য নিবার্চনের জন্য ইউনিয়নকে ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে হইবে।



(২) সংরক্ষিত আসনে সদস্য নিবার্চনের উদ্দেশ্যে একটি ইউনিয়নকে ৩ (তিন) টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে হইবে।
  
 
  
   
  
ওয়ার্ড সভা  
৪। (১) এই আইনের অধীন ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি ওয়ার্ড সভা গঠন করিতে হইবে।

(২) প্রত্যেক ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় অন্তভুর্ক্ত ব্যক্তিগণের সমন্বয়ে ঐ ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সভা গঠিত হইবে।
  
 
  
   
  
ওয়ার্ড পর্যায়ে উম্মুক্ত সভা 
৫। (১) প্রত্যেক ওয়ার্ড সভা উহার স্থানীয় সীমার মধ্যে বৎসরে কমপক্ষে ৩ (তিন) টি সভা অনুষ্ঠিত করিবে যাহার একটি হইবে বাৎসরিক সভা।

(২) ওয়ার্ড সভার কোরাম সবর্মোট ভোটার সংখ্যার বিশ ভাগের একভাগ দ্বারা গঠিত হইবে;

তবে মূলতবী সভার জন্য কোরাম আবশ্যক হইবে না, যাহা সাত দিন পর একই সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) ইউনিয়ন পরিষদ ওয়ার্ড সভা অনুষ্ঠানের অন্যূন সাতদিন পুর্বে যথাযথভাবে সহজ ও গ্রহণযোগ্য উপায়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করিবে; মূলতবী সভার ক্ষেত্রেও অনুরুপ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করিতে হইবে।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ার্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য সভাপতি হিসাবে উক্ত সভা পরিচালনা করিবেন।

(৫) সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ওয়ার্ড সভার উপদেষ্টা হইবেন।

(৬) ওয়ার্ড সভায় ওয়ার্ডের সাবির্ক উন্নয়ন কাযর্ক্রমসহ অন্যান্য বিষয়সমূহ পযার্লোচনা করা হইবে; বার্ষিক সভায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য বিগত বৎসরের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং আর্থিক সংশ্লেষসহ ওয়ার্ডের চলমান সকল উন্নয়ন কাযর্ক্রম সম্পর্কে অবহিত করিবেন এবং ওয়ার্ড সভার কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হইলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য এবং পরিষদের চেয়ারম্যান উহার যৌক্তিকতা ওয়ার্ড সভায় উপস্থাপন করিবেন।
  
 
  
   
  
ওয়ার্ড সভার ক্ষমতা, কার্যাবলী, ইত্যাদি  
৬। (১) এই আইনের বিধান সাপেক্ষে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওয়ার্ড সভার নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা, কার্যাবলী ও অধিকার থাকিবে, যথা :-

(ক) ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্যাদি সংগ্রহ ও বিন্যস্তকরণে সহায়তা প্রদান;



(খ) ওয়ার্ড পযার্য়ে প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত এবং বাস্তবায়নযোগ্য স্কীম ও উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রাধিকার নিরূপণ;



(গ) নির্ধারিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির উপকারভোগীদের চূড়ান্ত অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত ও ইউনিয়ন পরিষদের নিকট হস্তান্তর;



(ঘ) উন্নয়ন প্রকল্প কাযর্করভাবে বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান;



(ঙ) স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্থানীয় উন্নয়ন কাযর্ক্রম এবং সেবামূলক কাযর্ক্রম বাস্তবায়নে উৎসাহ প্রদান ও সহায়তাকরণ;

(চ) রাস্তার বাতি, নিরাপদ পানির উৎস ও অন্যান্য জনস্বাস্থ্য ইউনিট, সেচ সুবিধাদি এবং অন্যান্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্প স্থান বা এলাকা নির্ধারণের জন্য পরিষদকে পরামর্শ প্রদান;

(ছ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পরিবেশ সংরক্ষণ, বৃক্ষ রোপণ, পরিবেশ দূষণ রোধ, দুনীর্তিসহ অন্যান্য সামাজিক অপকর্মের বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা;

(জ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার লোকের মধ্যে ঐক্য ও সুসম্পর্ক সৃষ্টি করা, সংগঠন গড়ে তোলা এবং বিভিন্ন প্রকার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা;

(ঝ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত উপকারভোগী শ্রেণী বা গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ, তদারক ও সহায়তা প্রদান;

(ঞ) সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচিভুক্ত (যেমন, বয়স্কভাতা, ভর্তুকি, ইত্যাদি) ব্যক্তিদের তালিকা যাচাই ও মূল্যায়ন;

(ট) ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়নযোগ্য কাজের প্রাক্কলন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যাদি সংরক্ষণ;

(ঠ) সম্পাদিতব্য কাজ ও সেবাসমূহের বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ;

(ড) পরিষদ কতৃর্ক ওয়ার্ড সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের যৌক্তিকতাসমূহ অবহিত হওয়া;

(ঢ) ওয়ার্ড সভা কতৃর্ক গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পযার্লোচনা করা এবং কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা;

(ণ) জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কাযর্ক্রম, বিশেষত: বিভিন্ন প্রকার রোগ প্রতিরোধ এবং পরিবার পরিকল্পনা কাযর্ক্রমে সক্রিয় সহযোগিতা করা; স্যানিটেশন কাযর্ক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সহায়তা প্রদান;

(ত) ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ, রাস্তা আলোকিতকরণ ও অন্যান্য সেবা প্রদানে ত্রুটি বিচ্যূতিসমূহ চিহ্নিত করা এবং উহা দূরীকরণের ব্যবস্থা করা;

(থ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়ন;

(দ) যৌতুক, বাল্য বিবাহ, বহু বিবাহ ও এসিড নিক্ষেপের মত সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সামাজিক আন্দোলন গড়িয়া তোলা;

(ধ) জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কাযর্ক্রমে সহযোগিতা প্রদান করা;

(ন) আত্ম কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকান্ড উৎসাহিত করা;

(প) সরকার বা পরিষদ কর্তৃক অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব সম্পাদন।

(২) ওয়ার্ড সভা ইহার সাধারণ বা বিশেষ সভায় প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করিবে; তাছাড়া উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত উল্লেখযোগ্য কার্যাবলী, বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের বাজেট বিভাজন, কর্মপরিকল্পনা, খাত ভিত্তিক অর্থ বরাদ্দ, প্রাক্কলন, সম্পাদিত ও সম্পাদিতব্য কাজের মালামাল ক্রয় বাবদ অর্থ ব্যয় ইত্যাদি বিষয়ে জনগণকে অবহিত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ডের উন্মুক্ত দর্শনীয় স্থানে বোর্ডে লিখে টাঙ্গাইয়া দিবেন।

(৩) ওয়ার্ড সভায় অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন ও আলোচনা করিতে হইবে এবং এই বিষয়ে সভার মতামত ও সুপারিশ পরিষদের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে হইবে।



(৪) ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ওয়ার্ড সভায় উপস্থিত থাকিয়া সভার কাযবিবরণী তৈরী ও গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ রেকর্ড করিবেন এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরবর্তী পরিষদ ও ওয়ার্ড সভায় উপস্থাপন করিবেন।

(৫) ওয়ার্ড সভা কোন সাধারণ বা বিশেষ কাযার্দি সম্পন্ন করিবার উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক উপ-কমিটি গঠন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০ (দশ) জনের অধিক হইবে না এবং তন্মধ্যে অন্যূন ৩ (তিন) জন মহিলা হইবেন ।



(৬) সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে ওয়ার্ড সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে যতদূর সম্ভব সাধারণ ঐক্যমতের এবং সভায় উপস্থিত মহিলাদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বাঞ্চনীয় হইবে।

(৭) ওয়ার্ড সভা বিজ্ঞপ্তি আহবানের মাধ্যমে সম্ভাব্য উপকারভোগীদের নিকট হইতে প্রাপ্ত দরখাস্তসমূহ তদন্ত করিয়া যাচাই বাছাইয়ের জন্য সভায় উপস্থাপন করিবে; সভায় যাচাই বাছাইয়ের পর নির্ধারিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে উপকারভোগীদের চূড়ান্ত অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত করা হইবে এবং উহা পরিষদের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করিতে হইবেঃ



তবে শর্ত থাকে যে, কোনরূপ অনিয়ম প্রমাণিত না হইলে পরিষদ ওয়ার্ড সভা কতৃর্ক প্রস্তুতকৃত ও প্রেরিত অগ্রাধিকার তালিকা পরিবর্তন করিতে পারিবে না।
  
 
  
   
  
ওয়ার্ড সভার দায়িত্ব 
৭। (১) ওয়ার্ড সভা নিম্নলিখিত দায়িত্ব পালন করিবে,যথাঃ -



(ক) ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক ও জনকল্যাণমুখী কাযর্ক্রমের অগ্রগতি ও অন্যান্য তথ্যাদি সরবরাহ;

(খ) কৃষি, মৎস্য, হাঁস-মুরগি ও পশুপালন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, যোগাযোগ, যুব উন্নয়ন, ইত্যাদি বিষয়ক উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ;



(গ) জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ অত্যাবশ্যকীয় আর্থ-সামাজিক উপাত্ত সংগ্রহ;



(ঘ) বৃক্ষ রোপণ ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখা;



(ঙ) নারী ও শিশু নির্যাতন, নারী ও শিশু পাচার এবং যৌতুক, বাল্যবিবাহ ও এসিড নিক্ষেপ নিরোধ কাযর্ক্রম, দুনীর্তিসহ অন্যান্য সামাজিক অপকর্মের বিরূদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা;



(চ) ওয়ার্ডের আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখা;

(ছ) জনগণকে কর, ফি, রেইট, ইত্যাদিসহ বিভিন্ন প্রকার ঋণ পরিশোধের জন্য উদ্বুদ্ধ করা;



(জ) স্থানীয় সম্পদের সংগ্রহ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পরিষদের সম্পদের উন্নয়নে সহায়তা করা;



(ঝ) স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে উন্নয়নমূলক ও অন্যান্য সমাজগঠনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এবং সংগঠন তৈরীতে সহায়তা;



(ঞ) মহামারী ও প্রাকৃতিক দুযোর্গ মোকাবেলায় জরুরী ভিত্তিতে করণীয় নির্ধারণ।



(২) ওয়ার্ড সভার কাযাবর্লী ও দায়িত্ব সম্পর্কে পরিষদকে রিপোর্ট প্রদান।



(৩) ধারা ৬ ও উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব ছাড়াও ওয়ার্ড সভা ক্ষেত্র বিশেষে বিশেষ সভা আহবানের জন্য পরিষদকে অনুরোধ করিতে পারিবে।
  
 
  
  তৃতীয় অধ্যায়
পরিষদ
  
ইউনিয়নকে প্রশাসনিক একাংশ ঘোষণা  
৮। এই আইনের অধীন ঘোষিত প্রত্যেকটি ইউনিয়নকে, সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদের সহিত পঠিতব্য ৫৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এতদ্বারা প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক একাংশ বলিয়া ঘোষণা করা হইল।
  
 
  
   
  
পরিষদ সৃষ্টি 
৯।(১) এই আইন বলবৎ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যমান সকল ইউনিয়ন পরিষদ এই আইনের বিধান অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ হিসাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও বিধি সাপেৰে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সমপত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে অথবা ইহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে।

(৩) পরিষদ এই আইন দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা, কার্যাবলী এবং দায়িত্ব পালন করিবে।
  
 
  
   
  
পরিষদ গঠন 
১০। (১) ইউনিয়ন পরিষদ ১ (এক) জন চেয়ারম্যান ও ১২ (বার) জন সদস্য লইয়া গঠিত হইবে যাহাদের ৯ (নয়) জন সাধারণ আসনের সদস্য ও ৩ (তিন) জন সংরৰিত আসনের সদস্য হইবেন।

(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেৰে, চেয়ারম্যান ও সাধারণ আসনের সদস্যগণ এই আইন ও বিধি অনুসারে প্রত্যৰ ভোটে নির্বাচিত হইবেন।

(৩) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য ৩(তিন)টি আসন সংরৰিত থাকিবে, যাহা সংরৰিত আসন বলিয়া অভিহিত হইবে এবং উক্ত সংরৰিত আসনের সদস্যগণও এই আইন ও বিধি অনুসারে প্রত্যৰ ভোটে নির্বাচিত হইবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুসারে ৯(নয়)টি সাধারণ আসনের সদস্য নির্বাচনে মহিলা প্রাথর্ীদের সরাসরি অংশগ্রহণকে বারিত করিবে না।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্ত পরিষদের একজন সদস্য বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৫) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কতর্ৃক নির্ধারিত সম্মানী পাইবেন।

(৬) এই আইনের অধীনে গঠিত প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবে।

(৭) সরকার ইউনিয়নে কর্মরত সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ৰমতা প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারণ করিবে।
  
 
  
   
  
ইউনিয়ন গঠন 
১১। (১) ডেপুটি কমিশনার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত পদ্ধতিতে কতকগুলি গ্রাম বা সংলগ্ন মৌজা বা গ্রামের সমন্বয়ে একটি ওয়ার্ড এবং ৯ (নয়) টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে একটি ইউনিয়ন ঘোষণা করিবেন।



(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষিত ইউনিয়ন ডেপুটি কমিশনার কতৃর্ক নির্ধারিত নামে অভিহিত হইবেঃ



তবে শর্ত থাকে যে, ইউনিয়নের নামকরণ কোন ব্যক্তির নামে হইবে না।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ইউনিয়নের ওয়ার্ডসমূহের ক্রমিক নম্বর এবং উক্ত ওয়ার্ডের স্থানীয় সীমানা নির্দিষ্ট করিতে হইবে।

(৪) সরকার প্রত্যেক ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের লোক সংখ্যা নির্ধারণ করিবে।



(৫) ডেপুটি কমিশনার যেইরূপ অনুসন্ধান করা উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ অনুসন্ধান করিয়া পরিষদ গঠন করিবার পর, প্রজ্ঞাপন দ্বারা-



(ক) কোন ওয়ার্ড হইতে যে কোন মৌজা বা গ্রাম বা উহার অংশ বিশেষ বাদ দিতে পারিবেন;



(খ) কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডকে একাধিক ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে পারিবেন; অথবা



(গ) কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড এবং উহার সংলগ্ন এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করিয়া একটি ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পুনর্গঠন করিতে পারিবেন :



তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) অনুসারে কোন ইউনিয়ন পরিষদ উহার এলাকাভুক্ত এবং বাতিলকৃত কোন ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব না থাকিবার কারণে উক্ত পরিষদ গঠনের বৈধতা ৰুণ্ন হইবে না।

 
  
 
  
   
  
সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ 
১২। (১) উপজেলা নিবার্হী অফিসার ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের চাকুরিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্য হইতে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় সংখ্যক সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ও সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবেন।

(২) সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তার অধীনে কায সম্পাদন করিবেন ।
  
 
  
   
  
ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ 
১৩। (১) ওয়ার্ডসমূহের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এলাকার ভৌগলিক অখণ্ডতা এবং জনসংখ্যার বিন্যাস ও প্রশাসনিক সুবিধাদির প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে [ ***]।


(২) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ওয়ার্ডসমূহের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ রেকর্ডপত্র পরীক্ষা, তদন্ত এবং এতদ্সংক্রান্ত বিষয়ে উপস্থাপিত প্রস্তাবসমূহ বিবেচনা করিতে পারিবেন এবং প্রস্তাবিত কোন্ এলাকা কোন্ ওয়ার্ডের অন্তভুর্ক্ত হইবে উহা উল্লেখ করিয়া ওয়ার্ডসমূহের একটি প্রাথমিক তালিকা তাহার দফতর, বিভিন্ন স্তরভুক্ত পরিষদ কাযার্লয় ও তিনি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ অন্যান্য উম্মুক্ত স্থানে প্রকাশ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের ১৫ (পনের) কায দিবসের মধ্যে তৎসম্পর্কে আপত্তি ও পরামর্শ দাখিল করিবার আহবান সম্বলিত নোটিশ তাহার দফতর, বিভিন্ন স্তরভুক্ত পরিষদ কাযার্লয় ও তিনি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ অন্যান্য উম্মুক্ত স্থানে প্রকাশ করিবেন।

(৪) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রাপ্ত আপত্তি বা পরামর্শ উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবেন; উপজেলা নিবার্হী অফিসার উক্তরূপ আপত্তি বা পরামর্শ প্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ১৫ (পনের) কায দিবসের মধ্যে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ তদন্তের পর তাহার সিদ্ধান্ত সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তাকে জানাইবেন।

(৫) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী উপজেলা নিবার্হী অফিসার কতৃর্ক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রকাশিত প্রাথমিক তালিকা সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিবেন।



(৬) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিবার পর, তাহার দফতরে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কাযার্লয়ে এবং তাহার বিবেচনানুসারে অন্য কোন স্থানে ওয়ার্ডসমূহের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করিবেন যাহাতে প্রতি ওয়ার্ডে অন্তভুর্ক্ত এলাকাসমূহ নির্দেশ করিতে হইবে।

(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন প্রকাশিত তালিকার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ লিখিতভাবে ১০ (দশ) কায দিবসের মধ্যে ডেপুটি কমিশনারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন; ডেপুটি কমিশনার আপিলকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে শুনানির সুযোগ দিয়া উপজেলা নিবার্হী অফিসারের সিদ্ধান্ত এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও তথ্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া আপিল দায়েরের ৩০ (ত্রিশ) কায দিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন এবং আপিল কতৃর্পক্ষ হিসেবে ডেপুটি কমিশনারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৮) উপ-ধারা (৭) এর অধীন আপিল কতৃর্পক্ষের সিদ্ধান্তের পর সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ওয়ার্ডের সীমানার প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিয়া অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপীল দায়ের করা না হইয়া থাকিলে সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তভুর্ক্ত এলাকাসমূহ উল্লেখ করিয়া ওয়ার্ডসমূহের চূড়ান্ত তালিকা তাঁহার দফতরে, পরিষদের কাযার্লয় ও তাঁহার বিবেচনানুসারে অন্য কোন প্রকাশ্য স্থান বা স্থানসমূহে প্রকাশ করিবেন এবং তিনি উক্ত তালিকার সত্যায়িত কপি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং তিনি উহা সরকারি গেজেটে প্রকাশের ব্যবস্থা করিবেন।

(৯) সংরক্ষিত আসনের সদস্য নিবার্চনের উদ্দেশ্যে, সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা এই ধারার অধীন কোন ইউনিয়নকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়ার্ডে বিভক্তিকরণের সাথে সাথে, এই ধারার বিধানাবলী যথাসম্ভব অনুসরণ করিয়া, উক্ত ওয়ার্ডসমুহকে এইরূপ সমন্বিত ওয়ার্ডরূপে চিহ্নিত করিবেন যেন এইরূপ সমন্বিত ওয়ার্ডের সংখ্যা সংরক্ষিত আসন সংখ্যার সমান হয়।
  
 
  
   
  
পরিষদের এলাকা রদবদলের ফল 
১৪। (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন পরিষদ হইতে কোন একটি এলাকা সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হইলে উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে উহা উক্ত পরিষদের প্রশাসনিক অধিক্ষেত্র এবং সরকার যদি অন্যরূপ নির্দেশ না দিয়া থাকে তাহা হইলে, উক্ত পরিষদে বলবৎ নিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপনের অধীন থাকিবে না।

(২) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন একটি এলাকা সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অন্য কোন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত করা হইলে উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে উহা উক্ত পরিষদের প্রশাসনিক অধিক্ষেত্র এবং সরকার যদি অন্যরূপ নির্দেশ না দিয়া থাকে তাহা হইলে, উক্ত পরিষদে বলবৎ নিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপনের অধীন থাকিবে।

(৩) এই আইনেরবিধান অনুযায়ী কোন একটি পরিষদের এলাকাকে দুই বা ততোধিক পরিষদে বিভক্ত করা হইলে উক্ত এলাকাসমূহকে পৃথক পৃথক পরিষদ হিসাবে পুনর্গঠিত করিতে হইবে এবং অনুরূপভাবে বিভক্ত পরিষদ নবগঠিত পরিষদের অন্তভুর্ক্ত হওয়ার তারিখ হইতে আর বিদ্যমান থাকিবে না।

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন এলাকাকে কোন পরিষদের সঙ্গে একীভূত করা হইলে অথবা দুই বা ততোধিক পরিষদকে একটি মাত্র পরিষদ গঠনের জন্য একীভূত করা হইলে উক্তরূপ পুনর্গঠন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ পরিষদ বা পরিষদসমূহের সম্পত্তি, তহবিল, দায়দায়িত্ব, ইত্যাদি নির্ধারিত কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক লিখিত আদেশ দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সেইরূপ বিভাজন অনুসারে, নির্ধারিত পরিষদ বা পরিষদসমূহে বর্তাইবে এবং উক্তরূপ নির্ধারণ চূড়ান্ত হইবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী প্রদত্ত কোন আদেশে উক্তরূপ পুনর্গঠন কাযর্কর করিবার জন্য যেরূপ আবশ্যক হইবে সেইরূপ পরিপূরক, আনুষঙ্গিক ও পারিণামিক (Consequential) বিধানাবলী থাকিতে পারিবে; তবে উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী বিভক্তিকরণের পর বা উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী একীভূতকরণের পর, পরিষদ পুনর্গঠনের প্রয়োজনে-

(ক) পূবর্তন পরিষদের সদস্যগণের পদের মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া পযর্ন্ত নবগঠিত পরিষদ বা পরিষদসমূহে সাধারণ নিবার্চন অনুষ্ঠিত করা যাইবে না;

(খ) যে সকল সদস্যের পদের মেয়াদ অনুত্তীর্ণ থাকিবে সে সকল সদস্য সরকার বা তৎকতৃর্ক ক্ষমতা প্রাপ্ত কতৃর্পক্ষের আদেশক্রমে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সেই সকল নিবার্চনী এলাকা নিয়া গঠিত (সম্পূর্ণ বা আংশিক) পরিষদের সদস্য হিসাবে ঘোষিত হইবেন; যে সকল নিবার্চনী এলাকা হইতে উক্ত সদস্যগণ পূবের পরিষদসমূহে নিবার্চিত হইয়াছিলেন এবং এইরূপ যে কোন সদস্য তাঁহার পদের মেয়াদের অনুত্তীর্ণ অংশের জন্য নবগঠিত পরিষদের পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।
  
 
  
   
  
কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা অংশ বিশেষ পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন ইত্যাদিতে অন্তভুর্ক্তির ফল 
১৫। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা ইহার অংশ বিশেষ পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত বা কোন বিদ্যমান পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত ইউনিয়ন বা ইহার অংশবিশেষকে পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশন সংক্রান্ত প্রচলিত আইনে বর্ণিত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে:

আরো শর্ত থাকে যে, পৌর এলাকা বা সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হইবার পর উক্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অনূধব ১ (এক) মাসের মধ্যে উক্তরূপ ঘোষণার বিরুদ্ধে সরকারের নিকট লিখিত আপত্তি উত্থাপন করিতে পারিবে; উত্থাপিত আপত্তি সম্পর্কে সরকার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৌর এলাকা বা সিটি কর্পোরেশন গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।

(২) যদি কোন সময়ে, কোন ইউনিয়ন পরিষদের সমগ্র এলাকা উক্ত সময়ে বলবৎ কোন বিধি অনুযায়ী কোন প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা কোন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রশাসনিক এলাকাভুক্ত করা হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বা প্রজ্ঞাপনে যেরূপ নির্দিষ্ট হইবে সেইরূপ তারিখ, বা যে তারিখে নবগঠিত সংস্থাটির নিবার্চনসমূহ সম্পন্ন হয় সেই তারিখ, ইহাদের মধ্যে যাহা আগে হইবে, উক্ত তারিখ হইতে আর বিদ্যমান থাকিবে না এবং যে সকল সম্পত্তি, তহবিল ও অন্য পরিসম্পদ উক্ত পরিষদে বর্তাইয়াছিল তৎসমূহ এবং উক্ত পরিষদের সকল অধিকার ও দায়দায়িত্ব ক্ষেত্রানুযায়ী সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিকট সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের আদেশানুযায়ী বর্তাইবে ও হস্তান্তরিত হইবে এবং উক্ত পরিষদের অধীনে নিযু্ক্ত ব্যক্তিগণ তাহাদের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে ও নিয়োগের শর্তানুযায়ী যোগ্য বিবেচিত হইলে যে তারিখে উক্ত পরিষদ আর বিদ্যমান থাকিবে না সেই তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে নিয়োজিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) যদি কোন সময়ে, কোন পরিষদের অংশ বিশেষ উক্ত সময়ে বলবৎ কোন বিধি অনুযায়ী কোন প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা কোন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রশাসনিক এলাকাভুক্ত করা হয়, তাহা হইলে উক্ত পরিষদের অংশ, উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বা প্রজ্ঞাপনে যেরূপ নির্দিষ্ট হইবে সেইরূপ তারিখ, বা যে তারিখে নবগঠিত সংস্থাটির নিবার্চনসমূহ সম্পন্ন হয় সেই তারিখ, ইহাদের মধ্যে যাহা আগে হইবে, উক্ত তারিখ হইতে হ্রাসপ্রাপ্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; অনুরূপভাবে অন্তভুর্ক্তকৃত পরিষদের অংশ বিশেষের সকল সম্পত্তি, তহবিল ও অন্য পরিসম্পদ এবং উক্ত পরিষদের সকল অধিকার ও দায়দায়িত্ব ক্ষেত্রানুযায়ী সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিকট সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের আদেশানুযায়ী বর্তাইবে ও হস্তান্তরিত হইবে এবং সরকার অন্যরূপ নির্দেশ না দিলে, ক্ষেত্রানুযায়ী, উক্ত পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অধিক্ষেত্রাধীন (Jurisdiction) এলাকার জন্য বলবৎ সকল নিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপন উক্ত পরিষদ এলাকার যে অংশ উক্তরূপে অন্তভুর্ক্ত হয় সেই অংশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।
  
 
  
   
  
পৌরসভা, ইত্যাদির সমগ্র বা আংশিক এলাকা নিয়া ইউনিয়ন পরিষদ গঠন 
১৬। পৌরসভা, ইত্যাদির সমগ্র বা আংশিক এলাকা নিয়া ইউনিয়ন পরিষদ গঠন।- (১) যদি সরকার মনে করে যে, কোন পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সমগ্র এলাকা বা উহার কোন অংশ বিশেষের রূপরেখা পরিবর্তিত হইয়া গিয়াছে এবং উহার অধীনে এক বা একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা প্রয়োজন, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত প্রজ্ঞাপনের প্রাক-প্রকাশনার পর-

(ক) উক্তরূপ এলাকাকে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করিয়া কোন বিদ্যমান ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত করিতে পারিবে; বা



(খ) উক্তরূপ এলাকায় এক বা একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত প্রাক-প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনটি গণ-বিজ্ঞপ্তি আকারে অন্ততঃ দুইটি বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় (স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত একটি পত্রিকাসহ) এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও স্থানসমূহে প্রকাশ করিতে হইবে, যাহাতে উক্ত প্রকাশনার তারিখ হইতে দুই মাসের মধ্যে আপত্তি উত্থাপনের আহবান জানানো হইবে এবং সরকার কতৃর্ক নিযুক্ত কোন কতৃর্পক্ষ আপত্তি উত্থাপনকারী বা উত্থাপনকারীদের শুনানির সুযোগ দিয়া প্রাপ্ত আপত্তি বিবেচনা করিয়া সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশনার তারিখ হইতে ১৮০ (একশত আশি) দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপনে নির্দিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের নিবার্চন অনুষ্ঠিত করিতে হইবে এবং উক্তরূপ নিবার্চন সমাপ্তির তারিখ হইতে, উক্তরূপ এলাকা, ক্ষেত্রানুযায়ী, উক্তরূপে নির্দিষ্ট বা গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত বলিয়া গণ্য হইবে, এবং উক্তরূপে প্রজ্ঞাপিত এলাকার পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর অংশ হিসেবে আর বিদ্যমান থাকিবে না।

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত এলাকা যে তারিখ হইতে ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত করা হয় সেই তারিখ হইতে -

(ক) সংশ্লিষ্ট পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের যে এলাকা উক্তরূপে অন্তভুর্ক্ত হয় সেই এলাকা সম্পর্কিত সম্পত্তি, তহবিল ও দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক যেরূপ নির্ধারিত হইবে সেইরূপ বিভাজন অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদে বর্তাইবে ও উহার নিকট হস্তান্তরিত হইবে; এবং

(খ) উক্তরূপে অন্তভুর্ক্ত এলাকা সম্পর্কিত ব্যক্তিগণের মধ্যে যাহারা পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কতৃর্ক নিয়োজিত, তাহারা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত থাকিবার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিলে নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদে নিয়োজিত বলিয়া গণ্য হইবে।
  
 
  
   
  
নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুযোর্গ, ইত্যাদি কারণে পরিষদ পুনর্গঠন 
১৭। কোন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত সম্পূর্ণ এলাকা বা আংশিক অংশ নদী ভাঙ্গন অথবা অন্য কোন প্রাকৃতিক দুযোর্গের কারণে বিলীন বা বিলুপ্ত হইয়া গেলে সরকার, উক্ত পরিষদ বিধি অনুযায়ী বাতিল বা পুনর্গঠন করিবে এবং পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে নতুন পরিষদ গঠন না হওয়া পযর্ন্ত বিদ্যমান পরিষদ এই আইনের বিধান অনুযায়ী সকল কাযর্ক্রম পরিচালনা করিবে।
  
 
  
   
  
প্রশাসক নিয়োগ 
১৮। (১) কোন এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর ইহার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করিবে এবং এই আইনের বিধান মোতাবেক নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করিবেন :



তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর অধীন নিযুক্ত প্রশাসক ১২০ (একশত বিশ) দিনের অধিক সময় কাল দায়িত্বে থাকিতে পারিবেন না :



আরো শর্ত থাকে যে, কোন দৈব-দূর্বিপাকের কারণে এই আইনের বিধান মোতাবেক নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হইলে সরকার উক্ত মেয়াদ অনধিক ৬০ (ষাঁট) দিন বৃদ্ধি করিতে পারিবে।



(২) সরকার প্রশাসককে কর্মসম্পাদনে সহায়তা করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে কমিটি গঠন করিতে পারিবে।



(৩) প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যবৃন্দ, যথাক্রমে, চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।
  
 
  
  চতুর্থ অধ্যায়
চেয়ারম্যান ও সদস্য নিবার্চন
  
ভোটার তালিকা ও ভোটাধিকার 
১৯। (১) প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত একটি ভোটার তালিকা থাকিবে।

(২) কোন ব্যক্তি কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাভুক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি তিনি-

(ক) বাংলাদেশের একজন নাগরিক হন;

(খ) আঠারো বৎসরের কম বয়স্ক নহেন;

(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত নহেন;

(ঘ) সংশিষ্ট ওয়ার্ডের অধিবাসী বা অধিবাসী বলিয়া গণ্য হন।

(৩) কোন ব্যক্তি ভোটার তালিকায় যে ওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হইবেন, তিনি সেই ওয়ার্ডের সদস্য এবং চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।
  
 
  
   
  
নির্বাচন পরিচালনা, ইত্যাদি  
২০। (১) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত বিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্বাচনের আয়োজন, পরিচালনা ও সমপাদন করিবে এবং অনুরূপ বিধিতে নির্বাচন কমিশন নিম্নরূপ সকল বা যে কোন বিষয়ের বিধান করিতে পারিবে, যথা :-

(ক) নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং তাহাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;

(খ) প্রার্থীদের মনোনয়ন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আপত্তি এবং মনোনয়নপত্র বাছাই;

(গ) প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত জামানত গ্রহণ এবং উক্ত জামানত ফেরত প্রদান বা বাজেয়াপ্তকরণ;

(ঘ) প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ;

(ঙ) প্রার্থীদের এজেন্ট নিয়োগ;

(চ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি;

(ছ) ভোট গ্রহণের তারিখ, সময়, স্থান এবং নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;

(জ) ভোটদান পদ্ধতি;

(ঝ) প্রাপ্ত ভোট বাছাই ও গণনা, ফলাফল ঘোষণা এবং সমান সংখ্যক ভোট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় পদ্ধতি;

(ঞ) ব্যালট পেপার ও নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্রের হেফাজত ও বিলি বন্টন;

(ট) যে অবস্থায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করা যায় এবং পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যায়;

(ঠ) প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় এবং এতদসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়;

(ড) নির্বাচনে দুর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ এবং অন্যান্য নির্বাচনী অপরাধ এবং উহার দন্ড এবং প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের আচরণ ও আচরণ বিধি ভংগের দন্ড;

(ঢ) নির্বাচনী বিরোধ এবং উহার বিচার ও নিষপত্তি;

(ণ) অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ, ম্যাজিষ্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ, মামলার মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়াদি;

(ত) ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন সংক্রানত্দ দায়িত্ব পালনরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা; এবং

(থ) নির্বাচন সম্পর্কিত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়।

(২) কোন ব্যক্তি, উপ-ধারা (১) এর দফা (ড) এ উলিস্নখিত-

(ক) নির্বাচনে দূর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ করিলে তিনি অনূ্যন ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হইবেন;

(খ) নির্বাচনী অপরাধ করিলে তিনি অনূ্যন ৬ (ছয়) মাস এবং অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড দন্ডিত হইবেন; এবং

(গ) আচরণ বিধির কোন বিধান লংঘন করিলে তিনি অনূ্যন ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
  
 
  
   
  
নিবার্চনী ফলাফল প্রকাশ 
২১। চেয়ারম্যান এবং সদস্য হিসাবে নিবার্চিত সকল ব্যক্তির নাম নিবার্চন কমিশন, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।
  
 
  
  পঞ্চম অধ্যায়
নিবার্চনী বিরোধ
  
নিবার্চনী দরখাস্ত দাখিল 
২২। (১) এই আইনের অধীনে অনুষ্ঠিত কোন নিবার্চন বা গৃহীত নিবার্চনী কাযর্ক্রম বিষয়ে নিবার্চন ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত কোন আদালত বা অন্য কোন কতৃর্পক্ষের নিকট আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।

(২) কোন নিবার্চনের প্রাথী ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি উক্ত নিবার্চন বা নিবার্চনী কাযর্ক্রম বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন ও প্রতিকার প্রার্থনা করিয়া নিবার্চন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করিতে পারিবেন না।

(৩) এই আইনের ধারা ২৩ এর অধীন গঠিত নিবার্চন ট্রাইব্যুনালের বরাবরে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবার্চনী অভিযোগপত্র পেশ করিতে হইবে।

(৪) কোন আদালত -

(ক) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা সদস্যের নিবার্চন মুলতবী রাখিতে;



খ) এই আইন অনুযায়ী নিবার্চিত কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাঁহার দায়িত্ব গ্রহণে বিরত রাখিতে ;

(গ) এই আইন অনুযায়ী নিবার্চিত কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাঁহার কাযার্লয়ে প্রবেশ করা হইতে বিরত রাখিতে-

নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।
  
 
  
   
  
নিবার্চন ট্রাইব্যুনাল ও নিবার্চন আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন 
২৩। (১) এই আইনের অধীনে নির্বাচন সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের দ্বারা, একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এবং একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনী আপিল ট্রাইবু্যনাল গঠন করিবে।

(২) কোন সংৰুদ্ধ ব্যক্তি নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য বা সদস্যগণের নাম সরকারী গেজেটে প্রকাশের পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইবুনালে নির্বাচনী দরখাস্ত দায়ের করিতে পারিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী গঠিত ট্রাইবুন্যাল পরিষদের নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোন দরখাস্ত, উহা দায়ের করিবার ১৮০ (একশত আশি) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিবে।

(৪) নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।

(৫) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী গঠিত নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল দায়ের করিবার ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।

(৬) নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
  
 
  
   
  
নির্বাচনী দরখাস্ত ও আপিল বদলীকরণের ক্ষমতা  
২৪।নির্বাচন কমিশন নিজ উদ্যোগে অথবা পক্ষগণের কোন এক পক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে পেশকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে যে কোন পর্যায়ে একটি নির্বাচনী দরখাস্ত এক ট্রাইব্যুনাল হইতে অন্য ট্রাইব্যুনালে অথবা একটি আপিল ট্রাইব্যুনাল হইতে অপর একটি আপিল ট্রাইব্যুনালে বদলী করিতে পারিবে এবং যে ট্রাইব্যুনালে বা আপিল ট্রাইব্যুনালে তাহা এইরূপ বদলী করা হয় সেই ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনাল উক্ত দরখাস্ত বা আপিল যে পর্যায়ে বদলী করা হইয়াছে সেই পর্যায় হইতে উহার বিচারকার্য চালাইয়া যাইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচনী দরখাস্ত যে ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হইয়াছে সেই ট্রাইব্যুনাল উপযুক্ত মনে করিলে ইতিপূর্বে পরীক্ষিত কোন সাক্ষী পুনরায় তলব বা পুনরায় পরীক্ষা করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে আপিল ট্রাইব্যুনালও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
নিবার্চনী দরখাস্ত, আপিল, ইত্যাদি নিষ্পত্তি 
২৫। নিবার্চনী দরখাস্ত ও আপিল দায়েরের পদ্ধতি, নিবার্চনী ট্রাইব্যুনাল ও নিবার্চনী আপিল ট্রাইব্যুনাল কতৃর্ক নিবার্চন বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি, এখতিয়ার, ক্ষমতা, প্রতিকার এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
  
 
  
  ষষ্ঠ অধ্যায়
যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
  
পরিষদের সদস্যগণের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা 
২৬। (১) কোন ব্যক্তি এই ধারার উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন;

(খ) তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হয়;

(গ) চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের যে কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাঁহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে;

(ঘ) সংরৰিত মহিলা আসনের সদস্যসহ অন্যান্য সদস্যদের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাঁহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে।

(২) কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার এবং থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান;

(খ) তাঁহাকে কোন আদালত অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন;

(গ) তিনি কোন আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;

(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অনূ্যন ২ (দুই) বৎসরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর ৫ (পাঁচ) বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

(ঙ) তিনি প্রজাতন্ত্রের বা পরিষদের বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন কর্মে লাভজনক সার্বক্ষণিক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন;

(চ) তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা সদস্য হন;

(ছ) তিনি বা তাঁহার পরিবারের উপর নির্ভরশীল কোন সদস্য সংশিস্নষ্ট পরিষদের কোন কাজ সমপাদনের বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন বা ইহার জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোন বিষয়ে তাঁহার কোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে বা তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অত্যাবশ্যক কোন দ্রব্যের ডিলার হন;

(জ) মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখেন :

তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত নিজস্ব বসবাসের নিমিত্ত গৃহ-নির্মাণ অথবা ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ইহার আওতাভুক্ত হইবে না ;

(ঝ) তাঁহার নিকট পরিষদ হইতে গৃহীত কোন ঋণ অনাদায়ী থাকে বা পরিষদের নিকট তাঁহার কোন আর্থিক দায়-দেনা থাকে;

(ঞ) তিনি স্থানীয় সরকার পরিষদ কিংবা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী পরিশোধের জন্য নির্ধারিত অর্থ সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার পরিষদকে পরিশোধ না করেন;

(ট) তিনি পরিষদের তহবিল তসরূফের কারণে দন্ডপ্রাপ্ত হন;

(ঠ) তিনি এই আইনে বর্ণিত অপরাধে অথবা নির্বাচনী অপরাধ সংক্রান্ত অপরাধে সংশ্লিষ্ট আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যুন ২(দুই) বৎসর কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর ৫ (পাঁচ) বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

(ড) তিনি কোন সরকারি বা আধাসরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি ইত্যাদি হইতে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি. অসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধে চাকুরিচ্যুত হইয়া ৫ (পাঁচ) বৎসর অতিক্রান্ত না করেন;

(ঢ) তিনি বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দন্ডবিধির ধারা ১৮৯ ও ১৯২ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(ণ) তিনি বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দন্ডবিধির ধারা ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(ত) তিনি কোন আদালত কর্তৃক ফেরারী আসামী হিসাবে ঘোষিত হন;

(থ) জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইবু্যনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত হন।

(৩) প্রত্যেক চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় এই মর্মে একটি হলফনামা দাখিল করিবেন যে, উপ-ধারা (২) অনুযায়ী তিনি চেয়ারম্যান বা সদস্য নির্বাচনের অযোগ্য নহেন।
  
 
  
   
  
একাধিক পদে প্রার্থীতায় বাঁধা 
২৭। (১) কোন ব্যক্তি একই সাথে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে প্রার্থী হইতে পারিবেন না ।

(২) যদি কোন ব্যক্তি একই সাথে কোন পরিষদের একাধিক পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, তাহা হইলে, তাহার সকল মনোনয়নপত্র বাতিল হইবে।

(৩) পরিষদের মেয়াদকালে কোন কারণে চেয়ারম্যান পদ শূন্য হইলে, কোন সদস্য চেয়ারম্যান পদে নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেনঃ



তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত সদস্যকে স্বীয় পদ ত্যাগ করিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে হইবে।

(৪) কোন ব্যক্তি একই সংগে যে কোন স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেন না।
  
 
  
  সপ্তম অধ্যায়
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সম্পর্কিত বিধান
  
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের শপথ বা ঘোষণা 
২৮। (১) চেয়ারম্যান ও প্রত্যেক সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে প্রথম তফসিলে উল্লিখিত ফরমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন ব্যক্তির সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং শপথপত্র বা ঘোষণাপত্রে স্বাৰরদান করিবেন।

(২) চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত ব্যক্তিগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান ও সকল সদস্যের শপথ গ্রহণ বা ঘোষণার জন্য সরকার বা তদ্কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
  
 
  
   
  
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের কাযর্কাল 
২৯। (১) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।

(২) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হইতে হইবে ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নবগঠিত পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত না হইলে সরকার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে সভা আহ্বানের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে অনুষ্ঠিত সভা পরিষদের প্রথম সভা হিসাবে গণ্য হইবে।

(৩) পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ঐ পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর পূর্ণ হইবার ১৮০ (এক শত আশি) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষে নির্বাচনের পর উহার তিন-চতুর্থাংশ সদস্য শপথ গ্রহণ করিলে ইউনিয়নটি যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

ব্যাখ্যাঃ গঠিত পরিষদের মোট সদস্যদের তিন-চতুর্থাংশ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভগ্নাংশের উদ্ভব হইলে এবং তাহা দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশের কম হইলে অগ্রাহ্য করিতে হইবে এবং দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশ বা তার বেশী হইলে তাহা এক বলিয়া গণ্য করিতে হইবে।

(৫) দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্যবিধ কোন কারণে নির্ধারিত ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হইলে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ (নব্বই) দিন পর্যন্ত, যাহা আগে ঘটিবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
দায়িত্ব হস্তান্তর 
৩০। পরিষদ গঠনের পর পূববর্তী চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য তাঁহার দখলে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা পরিষদের সকল নগদ অর্থ, পরিসম্পদ, দলিল দস্তাবেজ, রেজিষ্টার ও সীলমোহর যতশীঘ্র সম্ভব অথবা উপজেলা নিবার্হী অফিসার কতৃর্ক স্থিরীকৃত তারিখ, সময় ও স্থানে নতুন নিবার্চিত চেয়ারম্যান বা, ক্ষেত্রমত, মনোনীত প্যানেল চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্যের নিকট পরিষদের সচিব ও উপজেলা নিবার্হী অফিসারের মনোনীত একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বুঝাইয়া দিবেন।
  
 
  
   
  
ব্যত্যয়ের দণ্ড 
৩১। (১) যদি কোন চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রাপ্ত কোন সদস্য ধারা ৩০ অনুযায়ী নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তিনি ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা পযর্ন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডণীয় হইবেন।



(২) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য ধারা ২৬ (৩) অনুযায়ী তাহার অযোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করিলে তিনি তিন বৎসর পযর্ন্ত মেয়াদে কারাদণ্ড অথবা ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের পদত্যাগ 
৩২। (১) কোন সদস্য পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর তাহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ পদত্যাগ পত্র চেয়ারম্যান কতৃর্ক গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত সদস্যের পদ শুন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট সদস্যের পদত্যাগ পত্র গৃহীত হওয়ার বিষয়টি অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে অবহিত করিবেন।

(২) চেয়ারম্যান এতদুদ্দেশ্যে উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট, তাহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্ত পদত্যাগ পত্র গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত চেয়ারম্যানের পদ শুন্য হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পদত্যাগের বিষয়টি উপজেলা নিবার্হী অফিসার অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে পরিষদ, নিবার্চন কমিশন এবং সরকারকে অবহিত করিবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যানের প্যানেল 
৩৩। (১) পরিষদ গঠিত হইবার পর প্রথম অনুষ্ঠিত সভার ৩০ (ত্রিশ) কাযদিবসের মধ্যে অগ্রাধিকারক্রমে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি চেয়ারম্যানের প্যানেল, সদস্যগণ তাহাদের নিজেদের মধ্য হইতে নিবার্চন করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নিবার্চিত তিনজন চেয়ারম্যান প্যানেলের মধ্যে কমপক্ষে একজন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণের মধ্য হইতে নিবার্চিত হইবেন।

(২) অনুপস্থিতি, অসুস্থতাহেতু বা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পযর্ন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) পদত্যাগ, অপসারণ, মৃত্যুজনিত অথবা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে নিবার্চিত নতুন চেয়ারম্যান কাযর্ভার গ্রহণ না করা পযর্ন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যানের প্যানেলভুক্ত সদস্যগণ অযোগ্য হইলে অথবা ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে নতুন চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরী করা যাইবে।


(৫) উপ-ধারা (১) ও (৪) অনুযায়ী সদস্যদের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল প্রস্তুত করা না হইলে, সরকার প্রয়োজন অনুসারে, সদস্যগণের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরি করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের সাময়িক বরখাস্তকরণ ও অপসারণ 
৩৪। (১) যে ৰেত্রে কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত অপরাধে অপসারণের জন্য কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা তাঁহার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে অথবা অপরাধ আদালত কর্তৃক আমলে নেওয়া হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপৰের মতে চেয়ারম্যান অথবা সদস্য কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পরিষদের স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হইলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে চেয়ারম্যান অথবা সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে আদেশ প্রাপ্তির ৩ (তিন) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ধারা ৩৩ এর বিধানমতে নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যানের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চেয়ারম্যান অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে পরিষদের কোন সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা উক্ত সদস্য অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন সদস্য নির্বাচিত না হওয়া পর্যনত্দ পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অপর একজন সদস্য উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৪) চেয়ারম্যান বা সদস্য তাঁহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি, তিনি-

(ক) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;

(খ) পরিষদ বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন, অথবা দুর্নীতি বা অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া দন্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন;

(গ) তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;

(ঘ) অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দোষে দোষী হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বা সমপত্তির কোন ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের বা অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হন;

(ঙ) এই আইনের ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন বলিয়া নির্বাচনের পর যদি প্রমাণিত হয়;

(চ) বার্ষিক ১২ (বার) টি মাসিক সভার স্থলে ন্যূনতম ৯ (নয়) টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত অনুষ্ঠান করিতে ব্যর্থ হন;

(ছ) নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করেন কিংবা দাখিলকৃত হিসাবে অসত্য তথ্য প্রদান করেন; অথবা

(জ) বিনা অনুমতিতে দেশ ত্যাগ করেন অথবা অনুমতিক্রমে দেশ ত্যাগের পর সেখানে অননুমোদিতভাবে অবস্থান করেন।

ব্যাখ্যাঃ এই উপ-ধারায় 'অসদাচরণ' বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ইচ্ছাকৃত কুশাসনও বুঝাইবে।

(৫) সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত এক বা একাধিক কারণে চেয়ারম্যান বা সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে বিধি মোতাবেক তদন্ত করিতে হইবে ও অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।

(৬) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য এর অপসারণের প্রস্তাব, সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভের পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।

(৭) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা সদস্যকে উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করা হইলে তিনি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আপিলটি নিষপত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবং আপিলকারীকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দানের পর উক্ত আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।

(৮) আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উপ-ধারা (৭) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৯) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি কোন পদে সংশিস্নষ্ট পরিষদের কার্যকালের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা সদস্য পদ শূন্য হওয়া 
৩৫। (১) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইবে, যদি-

(ক) তিনি ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা সদস্য হইবার অযোগ্য হইয়া পড়েন;

(খ) তিনি ধারা ৩৪ অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন বা অপসারিত হন;

(গ) তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধারা ২৮ (১) এ বর্ণিত শপথ গ্রহণ করিতে ব্যর্থ হন;

(ঘ) তিনি ধারা ৩২ এর অধীন পদত্যাগ করেন;

(ঙ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন; অথবা

(চ) ধারা ৩৯ অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করিয়া পদটি শূন্য ঘোষণা করিবেন।
  
 
  
   
  
শূন্য পদ পূরণ 
৩৬। যদি কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ তাঁহার মৃত্যু, পদত্যাগ, অপসারণ বা অন্যবিধ কারণে তাঁহার মেয়াদ পূর্তির কমপক্ষে ১৮০ (একশত আশি) দিন পূর্বে শূন্য হয়, তাহা হইলে, উক্ত শূন্যতার তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে অবশিষ্ট সময়ের জন্য শূন্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, দৈব দুর্বিপাক জনিত কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হইলে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য সুবিধাজনক তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে।
  
 
  
   
  
সদস্যপদ পুনর্বহাল 
৩৭। পরিষদের কোন নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য এই আইনের বিধান অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত বা অপসারিত হইয়া অথবা অযোগ্য ঘোষিত হইয়া সদস্যপদ হারাইবার পর আপিলে তাঁহার উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্ত আদেশ বা অপসারণ আদেশ রদ বা বাতিল বা প্রত্যাহার হইলে বা তাঁহার অযোগ্যতা অবলোপন হইলে, তাহার সদস্যপদ পুনর্বহাল হইবে এবং তিনি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্বপদে বহাল হইবেন।
  
 
  
   
  
চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের অধিকার ও দায়বদ্ধতা 
৩৮। (১) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্যের এই আইন ও সংশিস্নষ্ট বিধানাবলী সাপেক্ষে পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে।

(২) পরিষদের প্রত্যেক সদস্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতির নিকট পরিষদের বা স্থায়ী কমিটির প্রশাসনিক এখতিয়ারভুক্ত বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন বা কৈফিয়ৎ দাবী করিতে পারিবেন।

(৩) পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট নোটিশ প্রদান করিয়া পরিষদের যে কোন সদস্য অফিস চলাকালীন সময়ে, গোপনীয় নথিপত্র ব্যতীত, রেকর্ড ও নথিপত্র দেখিতে পারিবেন।

(৪) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্য পরিষদ বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত ক